
লোগো
সমাচার প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়া শুরু করলে জনতা ব্যাংকের উচ্চ পদে দলটির নেতাদের বসানো হয়। এরপর ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল বারকাতকে। ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময়ে এননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপকে ঋণ দেয় ব্যাংকটি।
এরপর ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠ দোহা টেকের লুনা শামসুদ্দোহা। ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন আহমেদ।
২০২০ সালের ২৯ জুলাই থেকে চলতি বছরের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এস এম মাহফুজুর রহমান। তাঁর সময়ে বেক্সিমকো গ্রুপ ব্যাংকটি থেকে ইচ্ছেমতো ঋণ বের করে নেয়।
আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের পাশাপাশি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদেও আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা নিয়োগ পান। এই সময়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলরাম পোদ্দার, নাগিবুল ইসলাম দীপু, মো. আবু নাসের ও মো. মাহবুবুর রহমান হিরন ব্যাংকটির পরিচালক ছিলেন। দলীয় লোকদের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন পেশাদার সদস্যরাও। এ ছাড়া সরকারের আমলা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরাও পর্ষদে দায়িত্ব পালন করেন। তবে তাঁদের কেউই প্রভাবশালীদের ঋণ আটকাতে পারেননি। এর ফলে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা দিন দিন শুধু খারাপই হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের টানা শাসনামলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে ছিলেন এস এম আমিনুর রহমান, মো. আবদুস সালাম, আবদুছ ছালাম আজাদ ও মো আবদুল জব্বার। আমিনুর রহমান ও আবদুস সালাম দুজনই চাকরি শেষে যোগ দেন এস আলম গ্রুপের দুই ব্যাংকে। আবদুছ ছালাম আজাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও শীর্ষ তিন খেলাপি গ্রাহকের তদবিরে তাঁকে এমডি করে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, কেন ব্যাংকটির এ পরিস্থিতি হলো, তা খুঁজে বের করে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করা দরকার। ব্যাংকটির এই পরিণতির জন্য কার ভূমিকা কেমন ছিল, তা-ও দেখা দরকার।