
সমাচার ডেস্ক
বাংলাদেশ ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। আজ রাজধানীর বিডা অডিটোরিয়ামে বিনিয়োগবিষয়ক সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান বিডার বিজনেস ডেভেলেপমেন্ট প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি। খবর বাসসের
বিনিয়োগ প্রস্তাবের প্রবাহকে ইতিবাচক প্রবণতা হিসেবে উল্লেখ করে রোচি বলেন, জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোর প্রায় ২০ শতাংশ ইতোমধ্যেই অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার মধ্যে রয়েছে চুক্তি স্বাক্ষর, জমি ইজারা নিশ্চিতকরণ এবং বরাদ্দপত্র।
তিনি আরও বলেন, এ প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে এবং সরকারের শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করছে।
রোচি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কেবল বিনিয়োগের পরিমাণ নয়, বরং এর মান ও স্থায়িত্বও নিশ্চিত করা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এবং প্রক্রিয়া আরও সহজতর হলে আগামী পাঁচ মাসে আরও কার্যকর ফলাফল বয়ে আনতে পারে।’
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) তথ্য অনুযায়ী, প্রস্তাবিত বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ বর্তমানে অনুসন্ধানী বা যথাযথ যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, প্রাথমিক আলোচনা এবং প্রাথমিক প্রকল্প পরিকল্পনা।
রোচি আরও বলেন, ‘এটি বৃহৎ পরিসরের বিনিয়োগের জন্য একটি স্বাভাবিক ধারা। বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ প্রস্তাবই অনুসন্ধানী পর্যায় থেকে শুরু হয় এবং সঠিক সহায়তা পেলে ধীরে-ধীরে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হয়।’
তিনি আরও জানান, আরও প্রায় ২০ শতাংশ প্রস্তাব এখন গভীর পর্যালোচনায় রয়েছে, যা আনুষ্ঠানিক নথিপত্রের পূর্ববর্তী ধাপ।
কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে, এ ধাপভিত্তিক বিনিয়োগ পাইপলাইন আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসে পুঁজি প্রবাহের একটি বাস্তবসম্মত চিত্র প্রদান করবে।
বেজার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বেজা একটি ইউনিফাইড ইনভেস্টমেন্ট পোর্টাল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে বিনিয়োগের অগ্রগতি, জমির প্রাপ্যতা ও অনুমোদন সংক্রান্ত তথ্য এক প্লাটফর্মে পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ পোর্টাল বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং প্রশাসনিক ফলোআপের সময় কমিয়ে আনবে। পাশাপাশি এটি বিনিয়োগের বিভিন্ন ধাপের রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং সুবিধা দেবে। যা সরকারি ও বেসরকারি উভয় পক্ষকে আরও কার্যকরভাবে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে সহায়তা করবে।
টেকসই বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বেজা ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক পরামর্শকদের সহায়তায় একটি বিশেষ গবেষণা ইউনিট চালু করেছে। এ ইউনিট বর্তমানে রাবার, আসবাবপত্র, ওষুধশিল্প এবং পর্যটনসহ সম্ভাবনাময় খাতগুলো চিহ্নিত করছে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রস্তাব পাওয়া উৎসাহজনক হলেও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সেগুলোকে কার্যকরি প্রকল্পে রূপান্তর করা।
তিনি বলেন, জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে অবকাঠামো প্রস্তুতি ও ইউটিলিটি সেবা নিশ্চিত করতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।